মোটরসাইকেল ই-ক্লাচ প্রযুক্তি কি? | ই-ক্লাচ কিভাবে কাজ করে? ই-ক্লাচ এর সুবিধা ও অসুবিধা


প্রিয় রাইডার আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে জানাবো মোটরসাইকেলের নতুন প্রযুক্তি ই-ক্লাচ কি এই ই-ক্লাচ কিভাবে কাজ করে এবং ই-ক্লাচ এর সুবিধা কি ও ই-ক্লাচ এর অসুবিধা কি এই সম্পূর্ণ বিষয় ডিটেইলস জানতে আজকের এই আর্টিকেলটা শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আমি আশা করি ই-ক্লাচ সম্পর্কে আপনি সুন্দর একটি ধারণা পেয়ে যাবেন। অনেকে বহু বছর ধরেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করতেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত ক্লাচ এডজাস্ট করতে পারেননি, সঠিক সময় ক্লাচ ধরতে পারেন না! অথবা মনে থাকে না কিংবা ক্লাচ ধরার সঠিক ব্যবহার জানেন না। এজন্য এই ক্লাসের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে নতুন এক প্রযুক্তি এসেছে যার নাম ই-ক্লাচ। বর্তমানে হুন্ডা মাত্র ২টা মোটরসাইকেলে এই ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। প্রথমেই বলে রাখি ই-ক্লাচ প্রযুক্তি এমন এক প্রযুক্তি যেখানে আপনাকে মোটরসাইকেলের গিয়ার শিফট করা এবং ব্রেক ধরার সময় নিজে থেকেই ক্লাচ লিভার চাপার প্রয়োজন নাই, ই-ক্লাচ এর মাধ্যমে আপনার মোটরসাইকেল অটোমেটিকলি ই-ক্লাচ ধরার কাজটা করে দিবে! সে ক্ষেত্রে আপনাকে ক্লাচ ধরতে হবে না। আপনি শুধুমাত্র ব্রেক ধরবেন অথবা গিয়ার পরিবর্তন করবেন ক্লাচ ধরার কোন প্রয়োজন পড়বে না তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। 


মোটরসাইকেল ই-ক্লাচ কি এবং ই-ক্লাচ কিভাবে কাজ করে?

ই-ক্লাচ প্রযুক্তিতে গাড়ির গতি পরিবর্তন কিংবা থামানোর জন্য ক্লাচ ধরা লাগবোনা। শুধুমাত্র থ্রোটল ব্যবহার করতে হবে এবং গিয়ার পরিবর্তন করতে হবে। আরো বিস্তারিত বলতে গেলে, ই-ক্লাচ হলো একটি ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল প্রযুক্তি যা স্বয়ক্রিয়ভাবে মোটরসাইকেল এর ক্লাচ নিয়ন্ত্রণ করে। গাড়ি থামানো বা গতি পরিবর্তনের জন্য রাইডারকে আর ক্লাচ টেনে ধরতে হবে না। ই-ক্লাচ সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করে দিবে। আপনি শুধুমাত্র গাড়ির থ্রোটল  ব্যবহার করবেন অনেকে থ্রোটল কে পিকআপ বলে থাকে। শুধু পিকআপ বাড়ানো এবং কমানোর কাজটা আপনাকে করতে হবে, ক্লাচ ধরার যে কাজ ছিল সেটা ই-ক্লাচ নিজে থেকেই করে দিবে। বর্তমানে ই-ক্লাচ শুধুমাত্র HONDA নতুন মডেলের বাইকে যুক্ত করেছে, এবং রাইডার চাইলেই ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ডিসপ্লে থেকে অন এবং অফ করতে পারবেন। রাইডার চাইলে  ক্লাচ ব্যবহার করতে পারবে ম্যানুয়ালি অথবা সেটিংস থেকে ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ও ব্যবহার করতে পারবে।


মোটরসাইকেল ই-ক্লাচ প্রযুক্তির সুবিধা:

আধুনিক বিশ্বে হোন্ডা প্রথম নিয়ে আসছে মোটরসাইকেলে ই-ক্লাচ প্রযুক্তি এই ই-ক্লাচ প্রযুক্তির সুবিধা হলো; ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে মোটরসাইকেল চালানোর সময় বারবার ক্লাচ ধরার প্রয়োজন পড়বে না। হঠাৎ করে সামনে বিপদ আসছে ক্লাচ ধরতে হবে ঠিক তখনই যদি আপনার গাড়িতে যদি ই-ক্লাচ প্রযুক্তি থাকে তাহলে আপনাকে ক্লাচ ধরা লাগবে না। প্রতিবার গিয়ার শিফটিং এর জন্য ক্লাচ ধরা লাগবে না, শুধুমাত্র থ্রোটল কমালে বা বাড়ালে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হবে। সে ক্ষেত্রে বারবার ক্লাচ ধরার যে প্যাড়া এটা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং ই-ক্লাচ প্রযুক্তি যারা নিয়ে আসছে হোন্ডা তারা দাবি করছে এই ই-ক্লাচ প্রযুক্তির কারণে গাড়ি আগের থেকে বেশি কন্ট্রোলে থাকবে! সুন্দরভাবে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে! কাজেই ই-ক্লাচ প্রযুক্তিটা অবশ্যই ভালো প্রযুক্তি। 


মোটরসাইকেল ই-ক্লাচ প্রযুক্তির অসুবিধা: 

যেহেতু ই-ক্লাচ প্রযুক্তি এখনো আমাদের সামনে আসে নাই আমরা নিজেরা ব্যবহার করি নাই সে ক্ষেত্রে এখনই কোন অসুবিধা তুলে ধরা যাচ্ছে না, তবে যেহেতু এটা অটোমেটিক সিস্টেমে কাজ করবে সেহেতু হঠাৎ করেই দেখা গেল যে কোন একটা সময় ইমার্জেন্সি ভাবে ক্লাস ধরা লাগবে তখনই আপনার প্রযুক্তিটা কাজ করছেনা সেক্ষেত্রে আপনি কিন্তু বড় ধরনের বিপদে পড়তেও পারেন। এজন্য ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করার আগে সাবধান হতে হবে এবং ভালো করে চেক করতে হবে যে ১০০ বার ই-ক্লাচ প্রযুক্তির ব্যবহারে ১০০ বার ই সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা।

ই-ক্লাচ যেহেতু আধুনিক এক প্রযুক্তি হোন্ডা কোম্পানি প্রথম বিশ্বে এই ই-ক্লাচ প্রযুক্তি নিয়ে আসছে এবং আমি যেই মুহূর্তে এই আর্টিকেলটা লিখতেছি এই মুহূর্তে মাত্র হোন্ডা CB650R এবং CBR650R এই দুইটা মডেলে ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে! আশা করছি যদি ই-ক্লাচ প্রযুক্তি সঠিকভাবে কাজ করে এবং রাইডারদের ভালো ফিডব্যাক পাওয়া যায় তাহলে ভবিষ্যতে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল আসলেই ই-ক্লাচ প্রযুক্তি তার সাথে থাকবে তবে ই-ক্লাচ প্রযুক্তির সবচেয়ে ভালো লাগার যে বিষয় সেটা হচ্ছে আপনি ম্যানুয়াল ভাবে ক্লাচ ব্যবহার করতে পারবেন আবার ই-ক্লাচ প্রযুক্তি ও ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ ই ক্লাস প্রযুক্তি ON এবং OFF করে রাখা যাবে। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে ই-ক্লাচ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিশদ ধারণা পেয়েছেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url