মোবাইল কেনার আগে যা জানা দরকার - মোবাইল কেনার আগে করণীয়
বর্তমানে চিটার বাটপার এর জামানায় ভাল মোবাইল চেনা বড় দুষ্কর হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার টাকা দিয়ে ভালো মোবাইলের আশায় ফোন কিনে নিয়ে দুইদিন ব্যবহার করেই বুঝতে পারি আমাকে ঠকানো হয়েছে। ভালো ক্যামেরা বড় ডিসপ্লে বেশি রেম রম প্রসেসর দেখে মোবাইল কিনলাম অথচ কোম্পানি আমাকে ঠকালো এরকম প্রশ্ন এরকম অভিযোগ হাজার হাজার মানুষের। তাই মোবাইল কেনার আগে কতগুলো বিষয়ে আপনাকে ভালোভাবে নিশ্চিত হতে হবে তাহলেই আপনি মোবাইল কিনে ঠকার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন। মোবাইল কেনার আগে যা জানা দরকার তা আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে ক্লিয়ার করে দিব এই আর্টিকেল পড়লে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন মোবাইল কেনার আগে করনীয় কি তাহলে চলুন নিছে আলাদা আলাদা পার্ট করে বিস্তারিত আলোচনা করি।
ভালো ব্রান্ডঃ
ভালো মোবাইল কেনার সাজেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই ব্র্যান্ড টাকে উল্লেখ করে না কিন্তু একটা মোবাইল কতটুকু ভালো হবে তার অনেকটা ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে। একটা মোবাইল কেনার সময় আমরা ডিসপ্লে ব্যাটারি র্যাম রম প্রসেসর এগুলো বেশি বেশি দেখে ফোন কিনে ফেলি তারপর দেখা যায় সস্তা ব্র্যান্ড হওয়ার কারণে যে পারফর্ম করার কথা ছিল মোবাইলটা সেরকম পারফর্ম করছে না কাজেই ফিউচার বেশি বেশি আর এম প্রসেসর বেশি বেশি দেখেই সস্তা ব্র্যান্ডের ফোন কেনা থেকে বিরত থাকুন ভালো ব্র্যান্ডের ফোন কিনুন সেখানে স্পেসিফিকেশনে যতটুকু লেখা রয়েছে আপনি ঠিক ততটুকুই পারফরম্যান্স পাবেন। এজন্য ভালো ব্রান্ড চিনে ফোন কেনা জরুরী।
বড় ডিসপ্লেঃ
ফোন কেনার আগে ফোনের যে বিষয়টার প্রতি আপনার গুরুত্ব দিতে হবে সেটা হচ্ছে বড় ডিসপ্ল। আপনার জন্য ঠিক যতটুকু বড় ডিসপ্লে প্রয়োজন ততটুকু বড় ডিসপ্লে নির্বাচন করুন কারণ পূর্বে একটা ফোনের সাইজ ছিল এক থেকে দুই ইঞ্চি এখন সেটা 6 থেকে 7 ইঞ্চি অথবা আরও বেশিতে গিয়ে পৌঁছেছে ডিসপ্লের সাইজ যত বড় হবে আপনি মোবাইলে যে কোন কিছু দেখে তত বেশি মজা পাবেন যেমন কোন ছবি দেখে গেম খেলে অথবা অন্য সবকিছু বড় ডিসপ্লে হলে সব কিছু বড় বড় দেখা যায় ভালোভাবে কাজ করার সুবিধা পাওয়া যায়।
ক্যামেরাঃ
মোবাইল নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ভালো ক্যামেরা খুব গুরুত্বপূর্ণ তবে এখানে অনেকেই আছেন বেশি মেগাপিক্সেল মানে ভালো ক্যামেরা মনে করেন কিন্তু এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল বেশি মেগাপিক্সেল মানে হচ্ছে আপনার ছবির সাইজটা বড় হবে এখানে ছবির মান ভালো হবে কিনা তা নির্দেশ করে ওই ক্যামেরার লেন্স, মেগাপিক্সলা আর রেজিলিউশানের ওপরে। তাই বেশি মেগাপিক্সেল দেখেই আত্মহারা না হয়ে ভালো ক্যামেরা দেখে মোবাইল কিনুন।
রেমঃ
রেম একটা মোবাইলের বিরাট অংশ। রেম পূর্বে এক সময় আমরা ২৫৬ এমবি ব্যবহার করেছি যেটা বর্তমানে বাড়তে বাড়তে আট জিবি ১৬ জিবি অথবা আরও বেশি র্যামের মোবাইল পাওয়া যায় চেষ্টা করতে হবে নিজের বাজেটের ভিতরে ram কে বাড়িয়ে নেওয়া ন্যূনতম ৪ জিবি ৬ জিবি অথবা ৮ জিবি রেম ওয়ালা মোবাইল কিনতে পারলে সেখান থেকে অনেক ভালো পারফরম্যান্স আশা করা যায়।
ফোন স্টোরেজঃ
ফোন স্টোরেজ একটা মোবাইলের খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যেখানে আপনার ফাইলগুলো জমা থাকে ছবি অডিও ভিডিও অথবা অন্যান্য ডকুমেন্টস আমরা ফোন স্টোরেজে রাখি কাজেই ফোন স্টোরেজ যত বেশি হবে আপনি তত বেশি ডকুমেন্টস অডিও ভিডিও আপনার ফোন স্টোরেজে রাখতে পারবেন এবং ফোনের যত বেশি হয় মোবাইল তত ভালো পারফর্ম করে। ফোন স্টোরে যদি বেশি থাকে তাহলে এক্সট্রা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা লাগে না, আর মেমোরি কার্ড ব্যবহার কত বিরক্তিকর তা আমরা সকলে জানি মাঝে মাঝেই মেমোরি কার্ডের সবকিছু হঠাৎ করে ডিলেট হয়ে যায় ফরমেট দেওয়া লাগে কাজেই অনেক প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হারিয়ে যায় কিন্তু ফোন এ স্টোরেজে এই ঝামেলাগুলো হয় না এজন্য ফোন স্টোরেজ একটু বেশি দেখে ফোন কেনা ভালো।
প্রসেসারঃ
মোবাইল ফোনের সবচেয়ে দরকারি জিনিস হল ফোনের প্রসেসার। মোবাইল ফোনের প্রসেসার আমাদের মাথার মতন। আপনার মোবাইল ফোনে যত বেশি শক্তিশালী প্রসেসার থাকবে ফোন তত ভাল কাজ করবে। মানে ফোন তত স্মুথলি রান করবে। তাই ফোনের প্রসেসর ভালো দেখে ফোন নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান সময়ে কোয়াল্কম স্ন্যাপড্র্যাগন 845 বা এর থেকে বেশি প্রসেসার যদি পান তা হবে সব থেকে শক্তিশালী প্রসেসার।
ব্যাটারিঃ
ব্যাটারি মোবাইলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ। ব্যাটারি নির্দেশ করে আপনার মোবাইল কত সময় সার্ভিস দিবে যদি আপনার ব্যাটারি দুর্বল হয় তাহলে মোবাইলের অন্য সকল অঙ্গ প্রতঙ্গ অনেক ভালো সার্ভিস দিলেও সে সার্ভিস আপনি স্থায়ীভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না দুই ঘন্টা চার ঘন্টা পরে যদি ব্যাটারি চার্জ শেষ হয়ে যায় তাহলে বারবার ফোনটাকে চার্জ করতে হবে কোন একটা কাজ আপনি অনেক লম্বা সময় ধরে করতে পারবেন না। এমন একটা ব্যাটারি নির্বাচন করুন যেন অন্ততপক্ষে একদিন চার্জ থাকে। একদিন একটা ফোনে চার্জ থাকার জন্য নূন্যতম ৪০০০ থেকে ৬০০০ এমএএইচ ব্যাটারি দেখে মোবাইল কিনবেন।
আমি আশা করি উপরের এই নিয়মগুলি ফলো করে যদি আপনি কোন মোবাইল কেনেন তা অন্তত খারাপ হওয়ার কথা না বা আপনাকে হতাশ করার মত পারফর্ম করার কথা না সর্বোপরি আপনাদেরকে বলবো বেশি বেশি ফিচার লোভনীয় অফার দেখে মোবাইল না কিনে ভালো ব্রান্ড দেখে মোবাইল কিনবেন।